বিয়ের আগে মেয়েদের মানসিক প্রস্তুতি

বিয়ের আগে : ফ্যান্টাসি নয়, হোক বাস্তব প্রস্তুতি



বিয়ের আগে মেয়েদের মানসিক প্রস্তুতিটা কিন্তু সবচেয়ে বেশি। কারণ, পুরুষ যত টাকা আয় করুক না কেন, ঘর কিন্তু সামলে রাখেন ঘরের মেয়েরাই। পুরুষরা হলেন ঘরের ড্রাইভারের মতো, আর মেয়েরা হলেন সেই ঘরের ইঞ্জিন। ইঞ্জিন ছাড়া যেমন গাড়ি চলবে না, ড্রাইভার ছাড়াও গাড়ি চলা অসম্ভব।
.
তাদের সবচেয়ে বড় মানসিক প্রস্তুতি হলো, এত বছরের চেনা পরিবেশ আর নিজ পরিবারকে দূরে রেখে নতুন এক পরিবেশে গিয়ে নতুন পরিবারকে আপন করে নেয়ার মানসিক প্রস্তুতি। তাদেরকেই এখন থেকে জীবনের সুখ-দুঃখের অংশীদার বানিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি।
.
মেয়েরা স্বাভাবিকভাবেই বাসার সবচেয়ে আদুরে হয়ে থাকে। তাদের আবদারও থাকে বেশি। আবার কেউ  কেউ বড্ড অভিমানীও হয়। কিন্তু বিয়ের পর এই মেয়েকেই অনেক আবদার পরিস্থিতি বুঝে মনের মধ্যেই চেপে যেতে হয়।
.
আগে হয়তো নিজের বাসায় এঁটো বাসনগুলোও ধরতে ঘেন্না হতো, এখন তাকে এসব তো পরিষ্কার করতে  হবেই, ক'দিন বাদে সন্তানের মল-মূত্রও নিজহাতে  সাফাই করতে হবে। অথচ বিয়ের আগে এর মানসিক প্রস্তুতি না-থাকার কারণে অনেক মেয়েই শ্বশুরবাড়ি  এসে ভেঙে পড়ে। মন খারাপ করে বসে থাকে। সবাই এমন তা নয়, অনেকেই ছোট থেকে ঘরের সব কাজ  করা শিখে নেয়; তাদের জন্য বিয়ের পর সবকিছু  মানিয়ে নেয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।
.
আবার অনেকের অভ্যাস হলো সকালে আটটার আগে ঘুম না ভাঙা। আটটার পর মা এসে টেনেটুনে ঘুম ভাঙান। এ নিয়ে বাসায় প্রতিদিন বকাঝকা শুনতে শুনতে ক্লান্ত। কিন্তু বিয়ের পর এমন হলে চলবে না  বোন, এখন ফজরের পর উনুনের আগুনটা প্রথমে আপনাকেই ধরাতে হবে। আগে হয়তো বাসায় বুয়া এসে কাপড়চোপড় ধুয়ে দিতেন। শ্বশুরবাড়ি তো বুয়া নাও থাকতে পারে, তখন নিজের কাপড়, স্বামীর কাপড়, প্রয়োজনে খেদমতের নিয়তে শ্বশুর-শাশুড়ির কাপড়ও ধুয়ে দিতে হবে।
.
বিয়ের পরে মেয়েদের সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি সহ্য করতে হয় তা হলো, শ্বশুরবাড়ির বিভিন্ন আত্মীয়দের কটুকথা। বাবার বাড়ি থেকে কী দিল? কে কে দেখতে আসল? রান্না এমন কেন? শরীর এত শুকনো কেন? মাথায় চুল কম কেন? বাবার বাড়ি এত যাওয়া লাগে না কি, বছরে একবার গেলেই তো হয়!— এসব নানারকম কথা শুনতে হয় মুখ বুজে।
.
বাবার বাড়ির রাজকন্যা এখানে এসে হয়ে যায় ঘরের বউ। পার্থক্য এটাই যে, বাবার বাড়িতে তার মন জুগিয়ে চলতে হতো সবার। তার অভিমানের কাছে যেন রাজ্যের ক্ষমতাও নস্যি। কোনো কিছু চাওয়ার আগেই যেন তার সামনে তা হাজির করার জন্য সবাই ব্যতিব্যস্ত হয়ে যেত। অথচ এখন এখানে তাকে চলতে হবে সবার মন জুগিয়ে। এখানে অভিমানগুলো সব আঁচলেই মুছে যায়। কত আবদার হারিয়ে যায় স্বামীর সামর্থ্য না থাকার কারণে। এসব মেনে চলার জন্য বিয়ের আগেই মানসিক প্রস্তুতি দরকার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ