এসো আমার ঘরে - কেন পড়বেন? শানজানা আলম | Esho Amar Ghore : Shahnaza Alom

  • Title : এসো আমার ঘরে
  • Author : শানজানা আলম
  • Publisher : অন্যপ্রকাশ
  • Quality : হার্ডকভার
  • Edition : 1st Published, 2022
  • Country : বাংলাদেশ
  • Language : বাংলা
হয়তো কোনো ঝাপসা দিনে, বৃষ্টি মেঘের সুরে,
ডাকবে বলে প্রহর পেরোয় জানালাটার ধারে, 
হোক না দেরী, তবুও তুমি "এসো, আমার ঘরে"!!


ভালোবাসা পৃথিবীর এক বিচিত্র অনুভূতি। কখনো কখনো ভালোবাসা তৈরি হয় স্বভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত কারো প্রতি। তখন বৈপরীত্য নিয়েই সে হয়ে ওঠে সবথেকে প্রিয়জন, কাছের মানুষ। একদিকে ভীষণ সহজ সরল মৌরি আর বুদ্ধিমান, চটপটে শিহাব অন্যদিকে বোকাসোকা, হাড়কিপটে তপু, তার সাথে ভীষণ মেধাবী, বুদ্ধিমতি রিনি। বিপরীতমুখী স্বভাবের দুই যুগলের গল্প নিয়েই সাজানো হয়েছে, "এসো আমার ঘরে"।

এরকম অদ্ভুত পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি।।একটা রেস্টুরেন্টে এসেছিলাম বাবার বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে। মেয়েটি অল্পস্বল্প চেনা। বাবার কাছেই শুনেছি মেয়েটি পড়াশোনায় খুব ভালো নাকি৷ একবারই স্টেজে বউ দেখে জম্পেস খাওয়া শেষ করে পেছনের দিকে এসে বসেছি। বিয়ে বাড়িতে আসাই হয় কাচ্চি খাওয়ার জন্য। তখনই আব্বা এসে ডাকলেন। 

-তপু , একটু এদিকে এসো, সমস্যা হয়ে গেছে।

-কী সমস্যা আব্বা?

-একটা ঝামেলা হয়েছে।

-কী ঝামেলা!

-ছেলে আমেরিকা প্রবাসী। সেখান থেকে একজন ফোন করে জানিয়েছে ওখানে ছেলের একটা সংসার আছে!

-মারাত্মক বিষয়! আগে বলেনি?

-না, আগে বলেনি, বরং গলাবাজি করে মেয়েকে গয়না আর ফার্নিচার দিতে হবে বলেছিল। এখন জামালের মান ইজ্জতের প্রশ্ন। এতো আত্মীয় স্বজন। এর মধ্যে মেয়েটির বিয়ে ভেঙে গেলে, একটা কেমন বিষয়!

-তাহলে?

-আমি বলি কি, বিয়েটা তুমি করো।

-কী বলছেন আব্বা! এটা কীভাবে সম্ভব!

-কেন৷ সম্ভব না কেন? তোমার কোন পছন্দের মেয়ে আছে?

-তা না আব্বা, কিন্তু আমি এখনো তেমন ভালো কিছু করি না। যে টাকা পাই নিজের আসা যাওয়ায় শেষ। এই সময়ে একটা মেয়ের দায়িত্ব নেওয়া কেন বুদ্ধিমানের কাজ না আব্বা। তাকে কী খাওয়াবো!

-সেটা আমি বুঝব, তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে রিনি একটা মেয়ে হাতি, সব কিছু খেয়ে ফেলবে।

ওহ আচ্ছা, মেয়েটির নাম রিনি তাহলে! আমি সামনে রাখা পানির বোতল খুলে ঢক ঢক করে হাফ লিটার পানি খেয়ে ফেললাম। এখানে বড় পানির বোতল রাখেনি ভাগ্যিস! 

সবকিছু ঘটতে আধঘন্টা সময় লাগলো। রিনির আরো বেশি হতভম্ব হওয়া উচিত । তাকে ডেকে বলা হলো, তোমার বিয়ে ওই বরসাজা ছেলের সাথে হচ্ছে না। বিয়ে হবে তপুর সাথে। 

আমি একটা সাদা রঙের শার্ট আর জিন্স পরে আছি, মজার বিষয় হচ্ছে আসে পাশে সবাই পাঞ্জাবী পরা। আমি একাই শার্ট প্যান্ট পরে এসেছি। 

রিনিকে খুব বিচলিত মনে হলো না। আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, আঙ্কেল, উনি কি বিয়েতে রাজী? ওনার মুখ শুকনো লাগছে, জোর করে বিয়ে দিচ্ছেন না তো?  

আব্বা বললেন, ওর মুখ এমনিতেই শুকনো, খাওয়া দাওয়া করতে চায় না!
মাত্রই চারটা টিক্কা, এক পিস রোস্ট, দু প্লেট বিরিয়ানি মেরে দেওয়া আমি কিছু না খাওয়ার অপরাধে মুখ মলিন করে সই দিয়ে ফেললাম। রিনি দেখলাম স্বাভাবিক ভাবেই সই করল।  

আগের বরপক্ষ চলে গেল। বলা হয়েছিল খেয়ে যেতে, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে খাওয়া বিব্রতকর।আমার অবশ্য আগে ভাগেই খাওয়া শেষ। আমি বোধহয় একমাত্র পুরুষ যে নিচের বিয়ের বিরিয়ানি কলেমা পড়ার আগে গান্ডে পিন্ডে গিলে নিয়েছে!

প্রায় পঞ্চাশজনের মতো খাবার বেচে গেল। আমার বাবা বললেন, এই খাবার পার্সেল করে আমার বাসায় পাঠানোর ব্যবস্থা করো জামাল। বাসায় বউ নিয়ে গেলে কত মেহমান আসবে, তাদের তো ইনস্ট্যান্ট নুডুলস খাওয়ালে চলবে না। এর বিল অবশ্যই আমি দেবো। বিলের কথা বলা হলো সত্যি কিন্তু এখানে সব বিল এডভান্স পে করা ছিল। তাই বিল আর দেওয়া হলো না। রিনি, দুই হাড়ি বিরিয়ানি, এক হাড়ি রোস্ট সমেত আমরা বাসায় ঢুকলাম সন্ধ্যাবেলা।

- ফুল বউ 

শিহাব বললো, হুম। তবে তোমাকে শুধু শুধু বাদাম খাওয়ালাম না, একটা কারণ আছে।
মৌরি বাদাম চিবুতে চিবুতে বললো, কী কারণ?
-আমরা বিয়ে করছি, দুদিন পরে। পালিয়ে।
তোমাকে ডিটেল জানিয়ে দিবো। তুমি চলে আসবে!!
মৌরি মুখভরা বাদাম নিয়ে চোখ বড় বড় করে ফেললো!
২০
-তাহলে আদনান সাহেবের কী হবে, পালিয়ে কেন বিয়ে করবো! 
বাদাম চিবুতে চিবুতে মৌরি বললো।
-কি আশ্চর্য, আদনান সাহেবকে তোমার এতো পছন্দ, তুমি ওনাকে বিয়ে করতে চাও?
-আসলে বিয়ে তো ঠিক, আমিও রাজী। আপনি হুট করে কী সব বলা শুরু করলেন!
-আমি হুট করে বলিনি মোটু, আগেও বলেছি তুমি বুঝতে পারোনি, সেটা তো আমার দোষ না!
-মানে? আপনার সাথে টুসীর এনগেজমেন্ট হয়ে গেলো। এতই যদি আমাকে বিয়ে করতে চাইতেন, তাহলে তো আগেই বলতেন। 
শিহাবের রাগ হতে লাগলো৷ মোটু বাদাম চিবুচ্ছে আর কথা বলছে। 
-ওকে ফাইন, যাও আদনান সাহেবকে বিয়ে করো। বিয়ের পরে জিমে ভর্তি করে দিবে, ডায়েট চার্ট ধরিয়ে দিবে, তখন ভালো হবে, এমনে বাদাম আর কলিজা সিংগাড়া খাওয়াবে না। আলুকাবলি আর ঝুড়ি পেয়াজুও খাওয়া শেষ!
যা ভালো বোঝো করো!
মৌরি চিন্তায় পড়ে গেল। এসব কথা ফেলে দেওয়ার মতো না তো! তখন কী হবে! এমনিও আদনান ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলে, সুস্থ থাকার জন্য নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
তার মানে তো ডায়েট করতে বলে ইনডিরেক্টলি।চিন্তা করতে করতে করতে আবারও বাদাম মুখে দিলো।
-কী ভাবলে, বিয়ে করবে আদনান সাহেবকে!
মৌরি চিন্তিত মুখে তাকালো। আসলেই শিহাব তো দুদিন পর পরই মৌরির পছন্দ মতো জিনিসপত্র নিয়ে আসে। আদনান কি আনবে, আনবে হয়তো শশা আর গাজর আর টক দই। সাথে গ্রীন টি। ওহ নো, অখাদ্য যত সব।

এই যে শহরের শেষ মাথায় যে জঙ্গল, লম্বা লম্বা ওক গাছের সারি, আমি ওর ঠিক পেছনে থাকি, আপনি কোন দিন সন্ধ্যায় এলে দেখা হবে, বলেছিল জেনিফার। 
জেনিফারের বয়স চল্লিশের কিছু বেশি। শেতাঙ্গ হওয়ায় আমি ধরতে পারছিলাম না।
জেনিফারের সাথে আমার আলাপ হয় সেন্ট্রাল পার্কে। আমি মাঝে মাঝেই অফিস থেকে ফেরার সময় সেন্ট্রাল পার্কে গিয়ে বসি। হলদে হয়ে যাওয়া মেপল পাতা দেখতে আমার খুব ভাল লাগে।
সেন্ট্রাল পার্কের মাঝখান দিয়ে একটা লম্বা রাস্তা, এমাথা ওমাথা। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে রাস্তাটা চকচক করে। ঝরে পড়া মেপল পাতারা ভিজে যায়। আমার তাও দেখতে ভাল লাগে।

আমি বাংলাদেশের মেয়ে। আমাদের দেশে বৃষ্টি নামে খুব আয়োজন করে। বৃষ্টিতে আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষের মন উদাস হয়ে যায়। তার অফিসে বা বাসায় যেখানেই থাকুক, চাল ডাল মিলিয়ে খিচুড়ি খেতে চায়। সাথে থাকবে ডিম ভুনা।
অথবা জানালার পাশে গল্পের বই নিয়ে শুয়ে পরে। গরম গরম রঙ চা সাথে চানাচুর মুড়ি।
আমরা বেজায় খাদ্য রসিক। সিজনে সিজনে আমাদের খাবারে বৈচিত্র্য থাকেই।
আবহাওয়া চেন্জ হলে বা সকাল অথবা সন্ধ্যায়, আমাদের মেনু থাকে আলাদা।
পশ্চিমা এই দেশে আমি এমিগ্রান্ট হয়ে এসেছি।
একটা পাওয়ার প্লান্ট কোম্পনিতে জুনিয়র ইন্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছি।
গত সাত বছর যাবত থাকছি এখানে,
 মাঝে মাঝে চাল আর আলু সিদ্ধ করে খেলেও ভোজন রসিকতা করার ধৈর্য্য আমার নেই একদম।

যে শহরে আমার বেড়ে ওঠা,সেখানে আকাশ ছিল এক চিলতে। জানালা দিয়ে ছোট্ট আকাশ উকি দিতো। এই শহরে আকাশ অনেক বড়। হাইওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় বিশাল আকাশ আমাকে ফেলে আসা এক চিলতে আকাশের কথা মনে করিয়ে দেয়। 

মাঝে মাঝে এই শহরে তুষারে ঢেকে যায়। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বাবা মা তুষারমানব বানায়। আমি বের হই হাটতে। গায়ে গরম জ্যাকেট, মাথায় গরম চাদর পেচিয়ে হাটি অনেকটা পথ। সেন্ট্রাল পার্কের লেকের জল তখন বরফ হয়ে যায়।

এপ্রিল শেষে সারা শহর জুড়ে ফুলের উৎসব শুরু হয়। তখন পথের পাশে একসারি গাছগুলো গোলাপি ফুল ভরে থাকে। 

আমি বিয়ে করিনি। আমার গায়ের রঙ কালো। আমার মনে হয়, কেউ আমাকে আমি হিসেবে ভালোবাসবে না। সবাই হয় এদেশে আসতে চায় অথবা আমার টাকা পয়সা চায়।
দেশে ছিলাম যখন, তখন শুনেছি, এত পড়াশোনা করে কি হবে, কালা মেয়ের বর জুটবে না। আমি বর জুটানোর চেষ্টাও করিনি, বিশ্বাস করুন।

আমি রোজ সন্ধ্যায় পার্কে বসি। জেনিফারও আসে মাঝে মাঝে 
জেনিফারের হাতে থাকে একটা ব্যাগ। ব্যাগে সে শহর থেকে প্রয়োজনীয় বাজার করে নিয়ে যায়।
একদিন নিজেই যেচে আলাপ করলো। এদেশে কেউ যেচে আলাপ করে না, আমাকে পূর্বদেশীয় চেহারায় মনে হলো বলে, জেনিফার জানতে চাইলো, আমি কোথায় থাকি। কি করি।
প্রসংগত আমিও জানতে চাইলাম।

শহরের শেষ মাথার জংগল নিয়ে অনেক মিথ শুনেছি আমি। ওখানে নাকি মানুষেরা থাকেনা। যারা থাকে, তার অশরীরী।

তাই একটু কৌতুহলঃবশত জানতে চাইলাম, তুমি একাই থাকো??
জেনিফার বললো, না না, আমার ছেলে আছে, রোনাল্ড।
ও থাকে আমার সাথে। বিকেলে আমি হাটি এই পার্কে এসে। মানুষ দেখতে আমার খুব ভাল লাগে।
ওই যে দেখো, স্বামী স্ত্রী বসে আছে, স্ত্রী স্বামীর কাঁধে মাথা দিয়ে বসে আছে। কি অদ্ভুত সুন্দর লাগছে তাইনা!!

আমি তাকিয়ে দেখলাম। মাঝ বয়েসী এক দম্পতি বসা। চেরী গাছের নিচেই।
তার পাশে একটা ছোট বাচ্চা ছেলে খেলছে, পাশে এক বৃদ্ধ। নাতি হবে হয়তো।
একজন ন্যানী ধরনের কেউ স্ট্রলারে করে দশ/এগারো মাসের একটা বেবিকে নিয়ে হেটে বেড়াচ্ছে। 
আমারও মানুষ দেখতে খুব ভাল লাগে।

আমি বেজায় অলস, আমার কটেজে গিয়ে আমি রান্না বান্না তেমন করি না, দুটো ব্রেডে মেয়নেজ মাখি, একটা সসেজ ভাজি, সাথে একটু সালাদ। এটাই ডিনার আমার। পার্কে আমি অনেকটা সময় থাকি। 
জেনিফার আমাকে ওর বাসায় যেতে বললো।

জানালাম, যাবো একদিন।
এক রেইনি সানডেতে, বিকেলে জেনিফার এর বাসায় রওনা হলাম। শহর শেষ হয়ে গেল একসময়। জংগল শুরু হলো। মানুষের ভীর কমতে কমতে একসময় দেখলাম আমি একা, সামনে লম্বা ওক গাছের সারি।

আমি জেনিফারকে জোরে ডাকলাম। জেনিফার এসে আমাকে নিয়ে গেল।
একটা কাঠের বাড়ি৷অনেকটা গল্পের মতো। নিচটা গাছের গুড়ি দিয়ে উচু করা। কাঠের সিড়ি বেয়ে ওর ঘরে ঢুকলাম।
বেশ গুছানো।
কই কোথাও তো কেউ নেই। জেনিফারকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার ছেলে কই??
জেনিফার বললো, আছে পিছনের ঘরে। তুমি কি খাবে বলো?? তোমার জন্য একটু চিকেন স্টু করেছিলাম। আসলে এখানে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। রোনাল্ড চিকেন স্টু ভালোবাসে। তাই তোমার জন্যও করেছি।
আমি বললাম, তুমি ব্যস্ত হয়ো না, আমি কিছু একটা খেলেই হবে। আমাকে কফি দিতে পারো। ব্লাক কফি, নো সুগার, নো মিল্ক।

জেনিফার আমার জন্য কফি আনতে গেল, আমি বাড়িটা ঘুরে দেখতে লাগলাম।
ঘুরতে ঘুরতে পিছনের রুমে চলে এলাম, একটা ছবি টানানো, তিনজনের। জেনিফার সাথে একজন শেতাঙ্গ পুরুষ, কোলে একটা ছোট্ট বাচ্চা। 
একটা সুন্দর বাংলোর সামনে দাড়ানো।

পিছন থেকে জেনিফার এসে আমার পিঠে হাত দিলো। আমি কেঁপে উঠলাম। তাকিয়ে দেখি কফি হাতে জেনিফার। 
আমাকে কফি দিয়ে জেনিফার বললো, ও অ্যালবার্ট, আমার প্রাক্তন স্বামী। আমাকে আর রোনাল্ডকে ছেড়ে চলে গেছে।
আমি বললাম, ওহ, সরি।
জেনিফার বললো, সরি হওয়ার কিছু নেই।
আমি অবশ্য রোনাল্ডকে যেতে দেইনি, আমার কাছেই রেখেছি।

আমি বললাম, কই, ডাকো, ওকে দেখি একটু।
আসলে জেনিফার সবসময় রোনাল্ডের এত গল্প করে,
রোনাল্ড হাসে, রোনাল্ড খাওয়ার সময় তালবাহানা করে, রোনাল্ডের একটা সবুজ বল আছে, সেটা খুব পছন্দ করে। রোনাল্ডের সাথে থাকে ওর ক্যাট ডেভিড।
সাদা ধবধবে সে। 
আমি তাই রোনাল্ডকে খুজছিলাম মনে মনে।

জেনিফার বললো, আমার সুন্দর সংসার ছিল। রোনাল্ডের জন্মের পর আরো সুন্দর হলো। কিন্তু সুন্দর তো চিরস্থায়ী হলো না।
অ্যালবার্টের পরিবারের মানুষ আমাকে পছন্দ করতো না।
রোনাল্ডের মুভমেন্টাল ডিজঅর্ডার অ্যাটাজিয়া ধরা পরে। ব্রেন শরীরের সাথে সব সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। ওর গ্রোথ আটকে যায় একটা বয়সে।

অ্যালবার্ট আমাকে ছেড়ে চলে যায় ওর পরিবারের কাছে। রোনাল্ডের এই অসুখে আমাকে দায়ী করে।

বাইরে বৃষ্টি পড়ছিল। আমার কেমন অসস্তি হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল কোন সমস্যা আছে, আমি বুঝতে পারছিলাম না। 

জেনিফার বলা শুরু করে, রোনাল্ড নাকি বেশি দিন বাঁচবে না, ওর ডক্টর জানালো আমাকে। আমি রোনাল্ড আর ওর ক্যাটকে নিয়ে শহর ছেড়ে এখানে আসি। রোনাল্ড যদি চলে যেতে চায়, আমি ওকে যেতে দিবো না বলে।
এই দেখো রোলান্ডকে আমি যেতে দেই নি। একটা সাদা হিমবাক্সে রোনাল্ডকে দেখলাম। সাদা বরফে ঢাকা।
পাশে ওর ক্যাটও আছে।
রোনাল্ডকে দেখে সাত আট বছরের বাচ্চা মনে হলো
মনে হয় দুজনই ঘুমাচ্ছে। 
রোনাল্ডের মুখ হাসি হাসি।
জেনিফার বললো, রোনাল্ডের বয়স পঁচিশ। ওকে সাত বছর ধরে আমি এভাবে রেখেছি।
রোনাল্ড যখন মারা যায়, তখন ওর বয়স ছিল উনিশ।
জেনিফার তাহলে শহর থেকে ওর জন্যই বরফ নিয়ে আসে।

আমি এক ছুটে বের হয়ে এলাম। এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না মোটেও।
ঝড়বৃষ্টির মধ্যে আমি ছুটতে ছুটতে বাড়ির গেটে এসে জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।

আমার জ্ঞান ফেরার পরে দেখি আমার ল্যান্ডলর্ড আমার মাথার কাছে বসে আছে।
ডক্টর জানিয়েছে আমি ভয় পেয়েছি।

আমার কথা শুনে কয়েকজন জঙ্গলে জেনিফারের বাড়িতে যায় খোজ করতে। 
কিন্তু কেউ বাড়িটার খোজ পায়নি। 

জেনিফার
শানজানা আলম

"চন্দ্রাহত" বইয়ের গল্প

নতুন বই "এসো আমার ঘরে"- Collect This Book Original

Comments

Popular posts from this blog

[PDF] সীরাহ মুহাম্মদ প্রথম খন্ড এবং দ্বিতীয় খণ্ড রেইনড্রপস পিডিএফ - Sirah Muhammad (sa:) First & Last Raindrops

গাযওয়াতুল হিন্দ বই pdf - প্রফেসর ড. ইসমাতুল্লাহ | Gazwatul Hind by Professor Dr. Ismatullah

সিক্রেটস অব জায়োনিজম Full PDF : লেখক হেনরি ফোর্ড | Secrets of Jainism Bangla Anubad PDF