নেমেসিস PDF - মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন | Nemesis PDF : Mohammod Nazim Uddin
মনে হয় না, কোনো থৃলার প্রেমীর এখনও পড়তে বাকী আছে। সবার পছন্দের সিরিজ "বেগ-বাস্টার্ড।" একদম "শানদার" প্রারম্ভ বই "নেমেসিস।"
At a Glance Of Nemesis PDF
- Title : নেমেসিস পিডিএফ - Nemesis PDF
- Author : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
- Last Update : 30'6'2022
- Best Book : #6 In Thriller Books
- Publisher : বাতিঘর প্রকাশনী
- Quality : ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড
- ISBN : 9789847020891
- Edition : 12th Edition, 2019
- Number : of Pages 272
- Country : বাংলাদেশ
- Language : বাংলা
বিখ্যাত দুটি চরিত্রের জন্ম এ বই থেকে। একজন নায়ক "জেফরি বেগ" আর অন্যজন খলনায়ক "বাস্টার্ড।" একদম সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই।
দেশ বিখ্যাত লেখক নিজ বাসায় হঠাৎ খুন! দৌড়ে আসতে হলো "হোমিসাইড ডিটেকটিভ" জেফরি বেগ-কে। এবং খুব র্যাপিডলি ধরাও পড়লো খুনি। কিন্তু আদৌ কি ধরা পড়লো খুনি?
এরপর মঞ্চে আগমন ঘটলো বাস্টার্ড-এর। অতঃপর "টুইস্ট এন্ড টার্ন।"
অবশেষে যখন সমাপ্তি হলো আখ্যানের, তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন। তবে হ্যা, শেষের টুইস্ট আর টার্ন-টা ভীষণ অন্যরকম। পিলে চমকে দেওয়ার মতো।
একদম ঝরঝরে, মেদহীন এবং সুখপাঠ্য একটা থৃলার। চুম্বকের মতো আপনাকে শেষ পাতা পর্যন্ত আটকে রাখবেই। সময়টা কিভাবে কাটবে বুঝতেই পারবেন না।
◾উপক্রমণিকা
আমার পড়া মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের প্রথম বই হচ্ছে- “রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেনি”, যেটা প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৫ তে। বইটি নিয়ে আগেই কিছু লিখেছিলাম। তাই ওটা নিয়ে এখানে আর কিছু না বলি। তবে বইটা পড়ার পর আমি যে পরিমাণ চমৎকৃত হয়েছিলাম, তাতে নাজিম সাহেবকে আরো বেশি করে জানার সুতীব্র তৃষ্ণা পেয়ে বসলো আমাকে। শুরু করলাম এই অসাধারণ থ্রিলার লেখককে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি। খোঁজ নিয়ে জানলাম “বেগ-বাস্টার্ড” নামে লেখকের একটা আলোড়ন সৃষ্টিকারী সিরিজ আছে। সিরিজটা পাঠকমহলে দারুণভাবে সমাদৃত হয়। এখনো পর্যন্ত সিরিজে আছে সর্বমোট ৫টি বই। ১ প্রিকুয়েল ও ৪ সিকুয়েল এর সমন্বয়ে রচিত এই সিরিজ। সিরিজের প্রথম বইটির নাম- “নেমেসিস”। প্রকাশকাল ২০১০।
“নেমেসিস” এর জন্মের সময়টা লেখকের জন্য সুখকর ছিল না। এর প্রেক্ষাপটে আছে নানান প্রতিকূলতার গল্প। নাজিম সাহেবকে যারা ভালোভাবে চেনে অথবা তাঁর সাক্ষাৎকার দেখেছে বা পড়েছে, তারা ভালো করেই জানে লেখক “নেমেসিস” প্রকাশ করার জন্য কতটা সাহস দেখিয়েছিলেন। আমি গল্পটা ছোট্ট করে বলি।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন একজন লেখক, তবে তার আগে তিনি একজন প্রকাশক ও অনুবাদক। বাতিঘর প্রকাশনীর কর্ণধার তিনি। প্রকাশনা ব্যবসায় পড়ালেখা খুব জরুরী। ছোটবেলা থেকেই থ্রিলার জনরার প্রতি লেখকের ভীষণ ঝোঁক ছিল। ঝোঁকটা ছিল নেশার মত। সেই নেশা থেকে লেখক প্রচুর দেশি-বিদেশি বই পড়েন। তারপর একসময় অনুবাদে হাত লাগান। তাঁর করা কিছু অনুবাদিত বই পাঠকমহলে দারুণভাবে সাড়া ফেললেও তিনি মন থেকে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাঁর প্রধান লক্ষ্য ছিল মৌলিক থ্রিলার। বাংলা ভাষায় লেখা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন থ্রিলার।
কিন্তু এখানেও সমস্যা আছে। 'থ্রিলার' জনরা নিয়ে অনেকের অনেক চুলকানি আছে, নাক সিটকানি আছে। প্রবীণ পাঠকদের মতে এই জনরা নাকি মূলধারার সাহিত্যের বাইরে। এবং উঠতি বয়সের ছোঁকরারাই নাকি এই জনরার পাঠক। অর্থাৎ তাঁরা বলতে চান 'থ্রিলার' জনরা মূলধারার সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেনা। এই জনরা জীবনের কথা বলে না।
তাছাড়াও আরো ব্যাপার আছে। বাংলা ভাষায় যে আন্তর্জাতিক মানের থ্রিলার লেখা যায়- এটা অনেকের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়না। বাংলা ভাষায় থ্রিলার মানেই যেন বিদেশিদের অনুকরণ। নাজিম সাহেবের বেলায় এই ঝুঁকিটা আরও বেশি। তিনি যেহেতু অনুবাদ করে থাকেন, এর মানে ধরেই নিতে হবে- তাঁর লেখা থ্রিলার হয়ত কোনো বিদেশি বই থেকে টুকলিফাই করা।
এইসমস্ত ঝুঁকি মাথায় নিয়ে নাজিম সাহেব সাহস করে নেমেসিসের মত করেই নিয়ে আসেন “নেমেসিস”। বাংলা সাহিত্যের উর্বর ভুমিতে যত্ন করে রোপণ করেন থ্রিলারের চারাগাছ। সেই চারাগাছ এখন বটবৃক্ষের মত শিকড় গজিয়ে জায়গা দখল করে নিয়েছে।
বাংলাদেশের সাহিত্য জগতে থ্রিলার জনরাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য নাজিম সাহেবকে মনে রাখতে হবে। তাঁর অবদান স্বীকার করতে হবে। তাঁকে ধন্যবাদ দিতে হবে।
নাজিম সাহেব‚ আপনাকে ধন্যবাদ...
◾মূল রিভিউ
দেশের সবচাইতে জনপ্রিয় লেখক জায়েদ রেহমান পক্ষাঘাতগ্রস্থ অবস্থায় তাঁর নিজের এপার্টমেন্টে খুন হন। সন্দেহ করা হয় লেখকের দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার প্রেমিককে। কেননা যে রাতে লেখককে হত্যা করা হয়‚ সেই রাতে লেখকের পাশের ফ্ল্যাটে তাঁর স্ত্রী বর্ষা প্রেমিকের সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত ছিল। ফ্ল্যাটের ভেতর কাজের লোক ছাড়া বাইরের মানুষ আর কেউ ছিল না। এমনকি দারোয়ানও অচেনা কাউকে এপার্টমেন্টের ভেতর ঢুকতে দেখেনি। যার ফলে সাসপেক্ট হয়ে পড়ে বর্ষা ও তার প্রেমিক।
সেই রাতেই লেখকের ভিটা নুভা এপার্টমেন্টের সামনে এক অল্পবয়সী মাদকাসক্ত তরুণকে দুটোর সময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। টহলপুলিশের নজরে পড়ে যায় সে। পুলিশ তার কাছে এগিয়ে গেলে সে দৌড়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুদূর গিয়ে সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। পুলিশ তাকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। তরুণের ব্যাকগ্রাউন্ড ঘেঁটে দেখলে জানা যায় সে কোটিপতি বিশিষ্ট শিল্পপতির একমাত্র সন্তান। স্বয়ং হোমমিনিস্টার থানায় ফোন করে তরুণকে ছেড়ে দিতে বলে। ভোর হবার আগেই আদরের পুত্রকে থানা থেকে মুক্ত করে নিয়ে যায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সি ই এ সিদ্দিকী। সেদিন বিকেলেই তরুণকে পাঠিয়ে দেয়া হয় মুম্বাইয়ের রিহ্যাব সেন্টারে।
ওদিকে স্বনামধন্য লেখক জায়েদ রেহমানের হত্যাকান্ডের কেসটা পুলিশের হাতঘুরে চলে আসে তদন্তকারী নতুন প্রতিষ্ঠান হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টে। আধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত হয় এই ডিপার্টমেন্ট। জায়েদ রেহমানের কেসটার তদন্তের ভার পড়ে হোমিসাইডের চিফ ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগের কাঁধে। সে ইনভেস্টিগেশন চালিয়ে বুঝতে পারে লেখকের হত্যাকাণ্ডের পেছনে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী বর্ষার হাত রয়েছে। জেফরি বেগ বর্ষা আর তার অবৈধ প্রেমিককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
[পাঠক, খেয়াল করবেন- এই সিরিজের নাম “বেগ-বাস্টার্ড”। অর্থাৎ জেফরি বেগ এই সিরিজের প্রধান একজন।]
জনপ্রিয় লেখক জায়েদ রেহমানের মৃত্যুর পর তাঁর লেখা আত্মজীবনীমূলক শেষ বই ‘কথা’ নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। লেখকের দুই প্রকাশকের মাঝে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। দুটো প্রকাশনীই দাবী করে লেখকের লেখা শেষ বইটা তাকেই প্রকাশ করার জন্য দিয়ে গেছে। কিন্তু বইটি প্রকাশ করে একটি প্রকাশনী, যে প্রকাশনীর সাথে লেখকের সুসম্পর্ক অতীতে থাকলেও বর্তমানে ছিল না। মজার ব্যাপার হচ্ছে বইটি লক্ষ-লক্ষ কপি বিক্রি হলেও এতে জায়েদ রেহমানের সবরকমের কেলেঙ্কারির কথা লেখা আছে। ফলস্বরূপ অনেকেই মনে করে এটা জায়েদ রেহমানের নিজের লেখা বই না। বইটার সাথে জালিয়াতি করা হয়েছে।
এদিকে জেফরি বেগ হঠাৎ বুঝতে পারে তার তদন্তের মাঝে কিছু অসঙ্গতি রয়ে গেছে। সেই অসঙ্গতিগুলো প্রমাণ করে লেখকের হত্যাকাণ্ডের সাথে বর্ষা ও তার প্রেমিকের কোনো কানেকশন নেই। তারা ঘটনাচক্রে ফেঁসে গেছে। জেফরি এটা জানতে পেরে তদন্তের কাজ নতুন করে শুরু করে। এরজন্য তাকে ভীষণ বেগ পেতে হয়। কারণ জায়েদ রেহমানের কেসটা অফিশিয়ালি ক্লোজড হয়ে গেছে। জেফরি আনঅফিশিয়ালি ইনভেস্টিগেশন চালিয়ে যায়। নানানরকম কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে খুনির হদিস পায়। খুনি হচ্ছে ‘বাস্টার্ড’ নামধারী এক পেশাদার খুনি। তাকে জায়েদ রেহমানকে খুন করার জন্য ভাড়া করা হয়েছে। সকল পাঠক একযোগে স্বীকার করবে প্রফেশনাল কিলার বাস্টার্ড হোমিসাইডের চিফ ইনভেস্টিগেটর জেফরির চেয়েও অনেক স্মার্ট ও ভয়ঙ্কর।
জেফরি বেগ তদন্ত করে বাস্টার্ডকে কারা ভাড়া করেছে। সন্দেহ করা হয় লেখকের প্রথম স্ত্রী, বই প্রকাশক এবং একজন টিভি অভিনেত্রীকে। কিন্তু তদন্তের শেষপর্যায়ে জানা যায় এদের মধ্যে কেউই বাস্টার্ডকে ভাড়া করেনি। তাকে ভাড়া করেছে অন্য কেউ। অনেক শক্তিশালী কেউ। যাদের সাথে জেফরি কখনোই পেরে উঠবে না।
বাস্টার্ডকে ধরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে জেফরি বেগ। দুঃসাহসিক অভিযান চালিয়েও সে ব্যর্থ হয়। কিন্তু প্রখর বুদ্ধি ও শীতল স্নায়ুর অধিকারী বাস্টার্ড তার নিরাপত্তার জন্য জেফরিকে খুন করার জন্য তার ফ্ল্যাটে চলে যায়। কারণ বাস্টার্ডের একটা ছবি খুব অপ্রত্যাশিত একটা সোর্স থেকে উদ্ধার করতে পেরেছিল জেফরি। যার ফলে বাস্টার্ডের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে যায়। সেজন্য সে একটা পিস্তল সঙ্গে নিয়ে চলে যায় জেফরির ফ্ল্যাটে। মুখোমুখি হয় বেগ আর বাস্টার্ড। তারপর কী হয়? সেটা জানার জন্যেই বইটা পড়তে হবে।
◾সমালোচনা
রিভিউটা যেহেতু আমি লিখছি‚ এর মানে এখানের সমস্তকিছু আমার একান্তই ব্যক্তিগত অভিমত। সো‚ সমালোচনা সেই চোখেই দেখার অনুরোধ। যদি গল্পের প্লট নিয়ে বলি‚ তাহলে বলব এটা চমৎকার থ্রিলার। অধ্যায়ে-অধ্যায়ে থ্রিল পাওয়া যায়। আমার সমালোচনা গল্প নিয়ে নয়। আমার সমালোচনা অন্য জায়গায়।
“নেমেসিস” বইটাতে জনপ্রিয় লেখক জায়েদ রেহমানের চরিত্রটা যেভাবে বিল্ডআপ করা হয়েছে‚ তাতে অনেকেরই মনে হবে নাজিম সাহেব হুমায়ূন আহমেদের চরিত্রটা এখানে নিয়ে এসেছেন। ‘জায়েদ রেহমান’ চরিত্রের নব্বই শতাংশ হুমায়ূন আহমেদের সাথে মিলে যায়। যেমন জোড়া বিয়ে‚ দ্বিতীয় স্ত্রী মেয়ের বান্ধবী‚ দ্বিতীয় স্ত্রী নাট্য অভিনেত্রী‚ জায়েদ রেহমান লেখার পাশাপাশি সিনেমা ও নাটক বানাতেন এবং সেইসূত্রে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে প্রণয় হয়- তারপর বিয়ে‚ জায়েদ রেহমানের প্রথম স্ত্রীর নাম ‘গ’ বর্ণ দিয়ে এবং সে লেখকের ক্রাইসিস জীবনের সঙ্গী‚ জায়েদ রেহমানের সৃষ্ট ‘নীলকন্ঠ’ চরিত্র যেটা হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমু’কে ইঙ্গিত করে।
এতসব মিল দেখার পর অনেকের মত আমারও মনে হয়েছিল নাজিম সাহেব হয়তবা হুমায়ূন আহমেদকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে “নেমেসিস” লিখেছেন। এমন অভিযোগ এখন নয়‚ অনেক আগে থেকেই উঠে আসছে। নাজিম উদ্দিন সাহেব বারবারই এইসব প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন। অবশ্য তিনি বিষয়টাকে কাকতালীয় ব্যাপার বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমার সেটা মনে হয় না। এতটা মিল কাকতালীয়ভাবে কীভাবে সম্ভব?
কিন্তু আমি এটাও বলতে পারিনা- হুমায়ূন আহমেদের সাথে নাজিম সাহেবের কোনো বিরোধ ছিল। নাজিম সাহেব যেকোনো সাহিত্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে অন্যান্য অনেক লেখকদের পাশাপাশি হুমায়ূন আহমেদের নামটাও মেনশন করেন। এছাড়াও হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে নাজিম সাহেবের কোনো শীতল সম্পর্ক ছিল কি না‚ তাঁদের মাঝে কোনো বিরোধ ছিল কি-না‚ এসবের কোনো প্রমাণ আমজনতা মানে পাঠক; অর্থাৎ আমাদের কাছে নেই।
সুতরাং এখানে আমি ফিফটি-ফিফটি। আর ফিফটি-ফিফটি মানে শূন্য। অর্থাৎ নো কমেন্টস।
◾“বেগ-বাস্টার্ড” সিরিজ
“বেগ-বাস্টার্ড” সিরিজ নাজিম সাহেবের অনন্য সৃষ্টি। যেখানে নেগেটিভ চরিত্রের ‘বাস্টার্ড’ মানে ওই পেশাদার খুনিটা; সে ইনভেস্টিগেটর জেফরির চেয়েও পাঠকের কাছে অধিক প্রিয় হয়ে ওঠে। লেখক হিসেবে আমি এটা জানি- কোনো একটা নেগেটিভ চরিত্রকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করানোর পরও তাকে পাঠকের কাছে প্রিয় করে তোলা মোটেই সহজ কাজ নয়। এটা খুব টাফ। খুবই টাফ। নাজিম উদ্দিন সেটা পেরেছেন। এটা তাঁর কৃতিত্ব। এরজন্যে তাঁর প্রশংসা করতেই হবে।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে- ‘বাস্টার্ড' চরিত্রটি মূলত ‘গোস্ট-ক্যারেক্টার’। যেসব ক্যারেক্টারের কথা লেখকের মাথায় থাকেনা‚ প্লটেও থাকেনা‚ গল্পের মাঝখানে হঠাৎ ভুতের মতই উদিত হয়‚ সেসব ক্যারেক্টারকে ‘গোস্ট-ক্যারেক্টার’ বলে। বাস্টার্ডও সেরকম চরিত্র। নাজিম সাহেব তাকে ভেবে “নেমেসিস” লিখতে বসেননি। গল্পের প্রয়োজনে ‘বাস্টার্ড’ নিজেই জন্ম নিয়েছে। আর সেই বাস্টার্ডই এখন সিরিজের প্রধান একজন। তাকে কেন্দ্র করেই নাজিম সাহেবকে এই সিরিজ লিখতে হয়। লেখালেখির এটাই মিরাকল।
“বেগ-বাস্টার্ড” সিরিজের এখনো পর্যন্ত প্রকাশিত বই ৫টি। ষষ্ঠতম বই এখনো প্রকাশিত হয়নি। সেটা আশা করছি দ্রুতই পেয়ে যাব। সিরিজের বইগুলো-
১/ নেমেসিস
২/ কন্ট্রাক্ট
৩/ নেক্সাস
৪/ করাচি
৫/ কনফেশন
৬/ নেক্সট [আপকামিং]
[এই সিরিজের দ্বিতীয় বই ‘কন্ট্রাক্ট’ নিয়ে ওয়েব সিরিজ হয়েছিল। তাতে অভিনয় করেছে- আরেফিন শুভ‚ চঞ্চল চৌধুরী‚ জাকিয়া বারী মম সহ আরও অনেকে।]
◾গুণীলোকের গুণ গাওয়া একপ্রকার ঋণপরিশোধ
একজন লেখক নানাবিধ প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে যদি একটি জনরাকে খুব ভালোভাবে এস্টাবলিশড করতে পারে‚ তবে তো সেই লেখককে মনে রাখতেই হবে। নাজিম সাহেব আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন থ্রিলার রাইটার। তাঁর লেখায় একবার ঢুকে পড়লে আর বের হওয়ার উপায় নেই। পাঠককে দারুণভাবে আকর্ষণ করতে পারেন তিনি। ‘কন্ট্রাক্ট’ বইটা তিনি উৎসর্গ করেছিলেন যারা বিশ্বাস করে বাংলা ভাষায় আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন থ্রিলার লেখা সম্ভব তাদেরকে। আমিও সেই বিশ্বাসীদের একজন।
নাজিম সাহেব আপনি সুস্থ থাকুন। আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করি।
◾বাড়তি কথা
“নেমেসিস” বইয়ের মাঝে ওপার বাংলার জনপ্রিয় রকব্যান্ড ‘ফসিলস’ এর ‘নেমেসিস’ গানের দারুণ ফ্লেভার পাওয়া যায়। গানের লাইনগুলো এরকম-
‘ঠিক কোন স্বর্গের সিড়িতে পা ফেলে’
‘আজ তুই উড়বি ভেবেছিস‚ ঠোঁটে শিষ’
‘আজ তোর হয়ত জানা নেই’
‘দৃষ্টান্ত আছে সামনেই’
‘একদম শেষে হানা দেয় নেমেসিস’
‘সময় নিজের খেয়ালে‚ স্পষ্ট লিখছে দেয়ালে’
‘তোকে ধ্বংস করতে আসছে নেমেসিস’
বিবাগী শাকিল
০৫/০৯/২০২১
Comments
Post a Comment
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....