যাপিত দিনের গান PDF : লেখক সানজিদা সিদ্দিকী কথা | Japito Diner Gaan PDF (Short) Author Shanjida Shiddiki Kotha

  • বই : যাপিত দিনের গান
  • লেখক : সানজিদা সিদ্দিকী কথা
  • প্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন
  • বিষয় : ইসলামী সাহিত্য, সমকালীন উপন্যাস
  • পৃষ্ঠা : 112, কভার : পেপার ব্যাক, সংস্করণ : 1st Published, 2022
  • আইএসবিএন : 9789848046456, ভাষা : বাংলা








আমি একবার উড়ে যাওয়া চড়ুইয়ের বুক চিড়ে দেখেছিলাম; দেখলাম সেখানে অরুর চোখের দুই ফোঁটা জল, এক মেঘ মায়া। আমি বজ্রপাতের মতো চিৎকার করে বলেছিলাম, ছটফটে চড়ুই আমি তোমার মতো, তুমি ঠিক আমার মতো। আমি কি তাহলে ভুল ছিলাম, সে কথা নাহয় একটু বিশ্রাম নিক। কিছু সময় পরে বলি।

দেবদারু গাছের ডালে নতুন কচি পাতা এসেছে, সেইসব পাতারা ধীরে ধীরে হরিৎ বরণ নিয়ে দুরুদুরু বুকে ইতিউতি চায়। লিলুয়া বাতাসে উত্তর থেকে দক্ষিণে ঝুঁকে, পূর্ব থেকে পশ্চিমে ঝুঁকে পড়ে, এরপর আবার নতুন হাঁটতে শেখা বাচ্চাদের মতো বহু কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে দাঁড়ায়। আমি ওদের এক ভোরে হঠাৎ করেই বাতাসের গায়ে ভর দিয়ে ছুঁয়ে দিয়েছিলাম, বলেছিলাম দেখো হে নতুন পাতার দল, আমি ঠিক তোমাদের মতো, দেখো দেখো। আমারও বুকের ভেতরও অমন কচি সবুজ রং আছে তো। আমি কি তবে ভুল ছিলাম? কিছু সময় পরে বলি।

আপনেগো মতো ফকিন্নি মানুষ এই কারণেই রিকশায় উড়াই না। রিকশায় উইঠা জায়গা পর্যন্ত গিয়া রাস্তাত দাঁড়াইবেন। এর পরে গিয়া কতক্ষণ ডাইনে বামে তাকাইবেন। তারপর মুখটারে লুলা রমিজের মতো দুঃখী দুঃখী বানায় কইবেন— "ভাইসাব, মানিব্যাগ রেকে এসেচি'।

বলেই পিচিক করে থুথু ফেলল সবুজ লুঙ্গি পরা জাহাঙ্গীর। সে পেশায় রিকশাচালক হলেও ভাবগতি দেখলে মনে হয় সম্রাট শাহজাহান।

রিকশার পাশে দাঁড়িয়ে এদিক-সেদিক তাকাচ্ছে ছেলেটি। চোখে-মুখে দিশেহারা ভাব। এই ধরনের পরিস্থিতিতে তামাশা দেখার জন্য লোকের কোনো অভাব হয় না; কিন্তু এগিয়ে আসা লোক খুব হাতে-গোনা।

আস্তে আস্তে লোক জড়ো হচ্ছে। এক সিএনজিওয়ালা এসে থামল। ভিড় ঠেলে উকিঝুঁকি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে ব্যাপারখানা কী।

পুরাতন ধাঁচের দোতলা বাড়ির টানা বারান্দা থেকে নিউটন সাহেব এক দৃষ্টিতে

তামাশা দেখছেন। নিচে ঘটতে থাকা তামাশার সবই স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে সিএনজিওয়ালা খুব বিজ্ঞের মতো নানান ধরনের প্রশ্ন করে যাচ্ছেন সম্রাট রিকশাওয়ালাকে। রিকশাওয়ালা কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বলেই চলেছে—

-ভাইসাব, এই লোক শনির আখড়া থিকা রিকশায় উঠছে, রাস্তাত তিন জায়গাত থামসে, আমারে বহায়া থুইয়া কাজকাম করসে, এহন শাহজাহানপুর আইয়া থামসে। পকেট খামছায় ধুমছায় কয় – বাইসাব মানিবেগ রেকে এসেচি। কেমুনডা লাগে কন। সিএনজি ড্রাইভার বাম দিকে মাথা ঝুঁকিয়ে তর্জনী ঝড়ের বেগে চালিয়ে কানের ভিতর থেকে কিছু একটা বের করবার চেষ্টা করছে। ভাবগতি দেখে মনে হচ্ছে কানের ভিতর

সোনার মুদ্রা হারিয়ে গেছে। সেটাই টেনে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরপর কান চুলকানো শেষ করে অতি সিরিয়াস চেহারা করে বলছে—

* মেজাজ তো গরম হওনেরই কথা।'

আশপাশের আরও কিছু মানুষ সমযোগে মাথা নেড়ে সায় দিলো। ছেলেটি এখন আর এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

নিউটন সাহেব চায়ের কাপ রেখে উঠে দাঁড়ালেন। কামিনী ফুল ফুটেছে। সবুজ পাতাগুলো সাদা সাদা ফুলে ঢাকা পড়ে গেছে। এক ধরনের বাসি ও বিষণ্‌ন গন্ধ ছড়াচ্ছে ফুলগুলো; কিন্তু এই ঘ্রাণ মাথা পর্যন্ত ঢুকে যায়। উনি নাকে টেনে ঘ্রাণ নিয়ে চোখ বুজলেন। ঘ্রাণটাতে নিউটন সাহেব তার মায়ের গায়ের ঘ্রাণ পান। মা মারা গেছে প্রায় তেরো বছর, তবু কী স্পষ্ট সেই ঘ্রাণ। কঠিন চেহারার সেই মহিলা, দেখলেই কেমন ভয় ভয় লাগত; অথচ গায়ে কী মিষ্টি ঘ্রাণ। মা মারা যাবার পরদিন উনি হাঁটতে হাঁটতে একটা অচেনা রাস্তায় চলে গিয়েছিলেন, হঠাৎ দেখলেন মায়ের গায়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন। সেটার উৎস ধরে যেতেই দেখলেন একটা আধুনিক ছয়তলা বাড়ির গেইটের পাশে এক প্রকাণ্ড কামিনী ফুলের গাছ। সেই গাছ সাদা ফুলে ঢেকে গেছে। সেই ফুলের ঘ্রাণ পুরো এলাকা দখল করে নিয়ে গাছসহ গর্বিত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে। নিউটন সাহেব সেদিন আবিষ্কার করলেন তার মায়ের গা থেকে ঠিক এরকম ঘ্রাণ আসত। মনে মনে ভীষণ অবাকও হলেন, মা বেঁচে থাকতে কেন কখনো বুঝতে পারেননি! উনি সেই রাতে, সারারাত সেই গাছের পাশে বসে ছিলেন। দারোয়ান বারবার জিজ্ঞেস করলেও উদ্ভ্রান্তের মতো তাকাচ্ছিলেন। কোনো জবাব দেননি। ভোরে অচেতনমতো হয়ে গেলে দারোয়ান তার পকেট হাতড়ে মোবাইল ফোন বের করে কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওনার বাড়ির কেয়ারটেকারকে ডেকে নিয়ে আসেন।

নিউটন সাহেবের বয়স এখন সাতান্ন; তবে দেখতে একটু বেশি বয়সি মনে হয়। তার চেহারা খুব সাধারণ, কিন্তু চোখের মণির রং গাঢ় নীল। এই চেহারার মাঝে নীল চোখ খুব বেমানান লাগার কথা ছিল; কিন্তু অজানা কোনো এক কারণে মনে হয় যেন ঠিক এই চেহারায় এরকম একটা চোখই তো হবার কথা। ওনার আরও একটা অদ্ভুত বিষয় আছে। উনি যখন হাঁটেন, তখন মাথাটা সামান্য বাঁ পাশে হেলিয়ে অনেকটা যাপিত জীবনের গান

বুকের কাছে ঠেকিয়ে হাঁটেন। দেখে মনে হয় নিজের বুকে কান লাগিয়ে কিছু একটা শুনবার চেষ্টা করছেন। নিউটন সাহেবের পায়ে কোনোরকম সমস্যা না থাকলেও পা একটু টেনে হাঁটেন। ওনার বয়স তখন বারো-তেরো হবে, উনি হঠাৎ এক রাতে স্বপ্ন দেখলেন ওনার পোলিও হয়েছে। পোলিওতে এক পা চিকন হয়ে গেছে। আর একটা ছোট মেয়ে সোনালি চুলের, তার সঙ্গে মিলে ভিক্ষা করছেন। সেই মেয়ে স্বপ্নে তার বড় বোন, মিতা আপা। অনেক আগে থেকেই মিতা আপাকে উনি চিনেন। মিতা আপা শুধু স্বপ্নেই আসেন। স্বপ্নে দুজন মিলে নানান অদ্ভুত কাজকারবার করেন।

আজকের স্বপ্নে উনি একটু পরপর সেই সোনালি চুলের মেয়েকে বলছেন—মিতা আপা, ভাত খাব। আমার পেটে খিদা। তার স্বপ্নের বোন মিতা ভাইকে ঠেলে ঠেলে নিয়ে সামনে এগোচ্ছে, এর ওর কাছে বলছে—আমার ভাই, নাম নিউটন, তার খিদা লাগসে, ১ টাকা দেন।

ছোট নিউটন বোনের সঙ্গে সঙ্গে পা টেনে টেনে হাঁটছে।

পরদিন ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাবার সময় নিউটন পা টেনে টেনে হাঁটা শুরু করল। মা যতই বকেন, জানতে চান পায়ে কী হয়েছে, সে কিছুতেই বলবে না। মাথা নিচু করে রাখে। পরে ডাক্তার দেখিয়েও লাভ কিছু হয়নি। সেই থেকে আজ অবধি পা টেনেই হাঁটেন নিউটন সাহেব।

নিউটন সাহেব কামিনী গাছের ওপর থেকে চোখ সরিয়ে আরও একবার নিচে তাকালেন। আরও তিন-চারজন রিকশাওয়ালা যোগ হয়েছে। উনি রুমের দিকে গিয়ে খাটের পাশে রাখা মানিব্যাগ থেকে তিনশো টাকা বের করে বাসার মেইন গেইট খুলে ইয়াসিন আলিকে গম্ভীর কণ্ঠে ডাকলেন। ইয়াসিন আলি এই বাড়ির কেয়ারটেকার। নিউটন সাহেবের সমবয়সি।

ইয়াসিন, গেইট খুলে বের হয়ে বাম পাশে দেখবে ছাপা প্রিন্টের নীল শার্ট পরা এক রিকশাওয়ালা আছে। তার পাশে কালো রঙের টিশার্ট পরা শুকনামতো একটা ছেলে দাঁড়ানো। তুমি প্রথমে রিকশাওয়ালাকে এই তিনশো টাকা দিয়ে বলবে— শনির আখড়া থেকে শাহজাহানপুরের ভাড়া, সঙ্গে সঙ্গে তিনবার বসিয়ে রাখার ওয়েটিংচার্জসহ আছে। তারপর পাশে দাঁড়ানো ছেলেটিকে বলবে, আমি ডেকেছি।

ইয়াসিন কথা না বাড়িয়ে টাকা নিয়ে রওনা হলো। মনে মনে ভাবছে, শনির আখড়া

থেকে শাহজাহানপুরের ভাড়া ওয়েটিংচার্জসহ হলেও তিনশো টাকা হওয়ার কোনো কারণ নেই।

গেইট দিয়ে বেরুতে বেরুতেই ভাংতি পঞ্চাশ টাকা আলাদা করে ফেলল। মনে মনে

ভাবছে— *আমার কাম রিকশাওয়ালারে ভাড়া বুঝাইয়া বিদায় করা। বুদ্ধি খাটায়া পঞ্চাশটা টেকা

পকেটে রাখতে পারলে সমস্যাটা কই। এইটা আমার বুদ্ধির কামাই।'

ইয়াসিন আলির বাবা খোরশেদ আলি মূলত এই বাড়ির কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করত নিউটন সাহেবের মামার আমল থেকে। নিউটন সাহেবের ছোটবেলার খেলার সাথি বলতে এই ইয়াসিন আলিই ছিল। নিউটন সাহেবের মামা আতাহার খান নিউটন সাহেব এবং ইয়াসিন আলি দুজনকে একই স্কুলেই ভর্তি করে দিয়েছিলেন; কিন্তু ইয়াসিনের কাছে পড়ালেখা ছিল 'বেআক্কেল মাইনষে'র কাম। তাই একদিন ঘোষণা দিলো, সে গাড়ির মিস্ত্রী হবে। কিছুতেই পড়ালেখার মতো তুচ্ছ কাজ সে করবে না। শেষ পর্যন্ত তার গাড়ির মিস্ত্রী হওয়া হয়নি। জগতে মানুষ তার ইচ্ছামতো খুব কমই হতে পারে।

ছোটবেলার ইয়াসিন আর নিউটন নামের দুজন প্রাণের বন্ধু 'তুই' বলে ডাকলেও বড় হয়ে ইয়াসিন অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে সম্বোধনহীনভাবে বন্ধুর সঙ্গে দৈনন্দিন কথাবার্তা চালিয়ে যায়। নিউটন সাহেব কি করবেন বুঝে উঠতে না পেরে তুমিতে ফিরে এসেছেন।

ছেলেটির নাম অরুণ। অরুণ কাচুমাচু হয়ে ড্রয়িংরুমে ঢুকল। ড্রয়িংরুমে কাঠের সোফা। পুরাতন আমলের ডিজাইন। পুরো ড্রয়িংরুমে দুই সিটের একটা সোফা ছাড়া আর কোনো আসবাবপত্র নেই। আর রুমের মাঝখানে একটা বট বনসাই। দেখেই বোঝা যায় অনেক দিনের পুরাতন। রুমটার ভিতরে ঢুকলেই মনে হয় এই বাড়ি, এই ড্রয়িংরুম এই সবকিছুতে অদ্ভুত একটা প্রাচীন ব্যাপার আছে। ঘরের প্রতিটা কোণ কী জানি একটা বলে ফেলতে চাচ্ছে, একটু মন দিয়ে শুনলেই ধরে ফেলা যাবে; কিন্তু কোনো একটা কারণে ধরা যাচ্ছে না।

অরুণের রুমটাতে ঢুকেই মায়ের কথা মনে হলো। মায়ের গায়ের সুতি শাড়ির রোদে শুকানো ঘ্রাণ নাকে আসল। মায়ের রোগাক্রান্ত মুখটা অরুণ জোর করে সরিয়ে দিতে চাইল। বাবার ঘামে ভেজা পিঠ, অনেক দরাদরি করে বাজার থেকে অল্প কিছু বাজার আনা ক্লান্ত চেহারাও দূর করে দিতে ইচ্ছে করছে। অরুণের খুব পুকুর ঘাটলায় লেবু যাপিত জীবনের গান

অরুণের অবাক হবার পালা। অরুণের এরকম অবাক হওয়া হকচকিয়ে যাওয়া চেহারা দেখতে নিউটন সাহেবের অসম্ভব ভালো লাগছে।

বায়তুল মোকাররমের নিচ তলায় ছোট্ট একটা কলমের দোকান নিউটন সাহেবের। ইকোনমিক্সে ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা করে ওনার মামা যখন উনাকে নিজের ব্যবসায় ঢুকে যেতে বললেন, উনি জানালেন কাঠের গন্ধে নাকি ওনার দম আটকে আসে। সেই আমলে শাহজাহানপুর এলাকার সবচেয়ে বড় কাঠের ব্যবসা ওনার মামা আতাহার খানেরই ছিল। আতাহার খানের কোনো সন্তান না থাকায় ধরে নিয়েছিলেন নিউটনই তার ব্যবসার হাল ধরবে। ওনার স্ত্রী ছেলে হবার সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান। ছেলেটাও সাতদিন পরে মারা গেল।

নিউটন সাহেবের এখনো মামার অবাক দৃষ্টি চোখে ভাসে। ইউনিভার্সিটির রেজাল্ট বেরোনোর পর মামা এলাকার সব লোককে মিষ্টি খাইয়েছিলেন। উজ্জ্বল চোখ-মুখ নিয়ে রাতে ঘরে ফিরে নিউটন সাহেবকে বললেন,

-কিরে নি, কেমন লাগছে বেটা? এবার দোকানে বোস। বিয়ে থা দিই। -কোন দোকানে?

-এই কথার কী মানে দাঁড়ায়? কোন দোকানে মানে? আমার দোকানে।

-মামা কাঠের গন্ধে আমার দম আটকে আসে।

ওনার মামা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলেন। উনাকে দেখে মনে হচ্ছিল এর চেয়ে আজব কথা কেউ কোনো কালে তাকে বলেনি। কিছুক্ষণ থেমে উনি বলেছিলেন, -তাহলে তুমি কী করতে চাও? মায়ের মতো চাকরি? সারাজীবন অন্যের চাকর হয়ে থাকতে চাও?

-তবে? সন্ন্যাসী হবে? বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াবে?

-না। আমি একটা দোকান দেখেছি বায়তুল মোকাররমে।

-তো কি সেই দোকানে আতর টুপি জায়নামাজ—এইসব বিক্রি করতে চাও?

-জি না। কলম।

Comments

Popular posts from this blog

[PDF] সীরাহ মুহাম্মদ প্রথম খন্ড এবং দ্বিতীয় খণ্ড রেইনড্রপস পিডিএফ - Sirah Muhammad (sa:) First & Last Raindrops

গাযওয়াতুল হিন্দ বই pdf - প্রফেসর ড. ইসমাতুল্লাহ | Gazwatul Hind by Professor Dr. Ismatullah

সিক্রেটস অব জায়োনিজম Full PDF : লেখক হেনরি ফোর্ড | Secrets of Jainism Bangla Anubad PDF